আমাদের সংগঠন বাংলাদেশ ম্যাচবক্স কালেক্টর্স ক্লাব, বিএমসিসি একটি ছোট্ট সংগঠন। ক্লাবের নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি আমরা দেশের বিভিন্ন সামাজিক দায়বদ্ধতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে যতটা সম্ভব ভূমিকা রাখার চেষ্টা করি। বিগত নয় বছর ধরে আমরা সম্পৃক্ত। এবারও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করেছি এই দুর্যোগে মানুষের পাশে থাকতে। বিগত দু সপ্তাহ আমরা ফান্ড সংগ্রহ করেছি বিভিন্ন মাধ্যমে এবং আমরা নিজেরাও অংশ নিয়েছি। বিভিন্ন জেলার বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনা করে লক্ষীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার কিছু গ্রামকে আমরা সহযোগিতার জন্য নির্বাচন করি। ৪ সেপ্টেম্বর আমরা বাজার সম্পন্ন করি। ৫ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা থেকে আমরা ১৪ জন প্যাকেটিং শুরু করি। প্রতিটি আইটেম বস্তা থেকে খুলে বের করে মেপে প্যাকেট করা। যা চলে টানা ৬টা পর্যন্ত। মাঝে ২০ মিনিট লাঞ্চের বিরতি। আমরা ৪ জন বাদে পুরো টিমে বাকিরা সব তরুণ। ২০ থেকে ২৫ এর মধ্যে বয়স। তন্মধ্যে আশরাফুল, তমাল, মাহফুজ, তাসিন অন্যতম। এই তরুণ গুলো যে কি অমানবিক পরিশ্রম করেছে তার সাক্ষী আমি নিজেই (আমার উপলব্ধি করতে অসুবিধা হয়নি কিভাবে তরুণরা ত্রিশ দিনেই একটি দেশ পাল্টে দিয়েছিল)। বিকাল ৬টায় আমাদের একটি বিরতি ছিল। রাত দশটায় আমাদের ট্রাক আসে। ৪৬৫ প্যাকেট আমাদের লোড করতে হয়েছে। যার প্রতিটি প্যাকেটের ওজন ১০ কেজির ওপর। এ পর্বে অংশ নেই আমরা সিনিয়ররা। আমাদের গন্তব্যের জন্য সময় ঠিক করা হয়েছিল ভোর চারটা। চারটায় পারিনি আমরা যাত্রা শুরু করি ঠিক ৫টায়। ১০জনের টিম। ট্রাকের পিছনে কোনভাবে গাদাগাদি করে বসা। মাঝ পথে বৃষ্টি। ভালো খারাপ রাস্তা মিলিয়ে আট ঘন্টা ত্রিশ মিনিটের যাত্রা শেষে আমরা গন্তব্যে পৌঁছাতে পারি। এরপর ট্রাক থেকে আবার প্যাকেট আনলোড করে ভ্যানগাড়িতে তুলে কয়েক মাইল পথ কখনো হেটে বা কখনো পানি ভেদ করে তা মানুষের হাতে পৌঁছে দেয়া। এরপর আবারও দীর্ঘ নয় ঘন্টা ট্রাকের পিছনে বসে রাত ১টায় বাড়ি ফেরা।
সাকিল হক প্রেসিডেন্ট, বিএমসিসি
বাংলাদেশ ম্যাচবক্স কালেক্টরস ক্লাব এক ভালোবাসার নাম, এক অনুভূতির নাম, এক প্রশান্তির নাম। শখের জগতে নিজেদের এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে আমাদের নিরন্তর এই পথচলা। আর সাথে পেয়েছি কিছু সমাজ সচেতন, উদ্যমী, শিল্পমনা ও প্রগতিশীল মানুষ। যারা সুন্দর চিন্তা করে, সমাজের প্রাসঙ্গিক পরিবর্তন চায়, দেশকে এগিয়ে নেয়ার স্বপ্ন দেখে। তাঁদের নিয়েই বিএমসিসি। আমরা সবসময়ই চেয়েছি ভালোর সাথে থাকতে, ভাল কিছু করতে। আমরা কখনোই গতানুগতিক, গদবাঁধা কোন সংগঠন করতে চাইনি। গতানুগতিকতার উর্দ্ধে উঠে উন্নত ভাবধারায়, যুগোপযোগী চিন্তা-চেতনার সন্নিবেশ ঘটাতে চেয়েছি। আধুনিক মেধা ও মননে সাজাতে চেয়েছি নিজেদের। আর তার বাস্তবতা হচ্ছে- বিএমসিসি।
শখের দুনিয়াটা আসলে বিশাল। শখের মাধ্যমে ভ্রাতৃত্ববোধ সুদৃঢ় করা যায়, সমাজে অবদান রাখা যায়, মানুষকে ইতিহাস সচেতন করে তোলা যায়, দেশের শিল্প-সংস্কৃতিকে লালন করা যায়, দেশের ঐতিহ্য বহির্বিশ্বে উপস্থাপন করা যায়। এছাড়াও আরো অনেক কিছু করা যেতে পারে। যার অনেকটাই ইতিমধ্যে অত্যন্ত সুচারু রুপে সম্পাদন করেছে বাংলাদেশ ম্যাচবক্স কালেক্টরস ক্লাব। আমরা একসাথে অনেক দূর যেতে চাই, অনেক ভাল কাজ করতে চাই। শুধু প্রয়োজন আপনাদের ভালোবাসা, সমর্থন ও সহযোগিতা। যা আমরা সবসময়ই আপনাদের কাছ থেকে পেয়ে এসেছি আর ভবিষ্যতেও সে ধারা অব্যাহত থাকবে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
“দিয়াশলাই” আমাদের ক্লাবের প্রথম প্রকাশনা। আপনাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও সহযোগিতায় আমরা সত্যিই অভিভূত। বর্তমান এই কঠিন বাস্তবতায় আপনারা যেভাবে আমাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন তা সত্যিই প্রশংসার দাবী রাখে। পাশাপাশি আমাদের বেঁধেছেন কৃতজ্ঞতার বাঁধনে। আর আমরা আমৃত্যু এ বাঁধনেই বাঁধা থাকতে চাই। যে কোন প্রকাশনাই যদি পাঠক প্রিয়তা না পায় তবে তা প্রকাশ অর্থহীন। আমরা এই প্রকাশনা নিয়মিত আপনাদের হাতে তুলে দিতে চাই নতুন ভাবনায়, নতুন আঙ্গিকে।
দিয়াশলাই আপনাদের পত্রিকা। আপনারাই এই পত্রিকার মালিক। আমরা শুধু এর বাস্তবায়ন, প্রকাশনা ও সংরক্ষণের কাজটা করছি। দিয়াশলাইয়ের সমস্ত সফলতা আপনাদের আর ব্যর্থতার দায়টুকু আমরা নিলাম। আপনাদের যেকোন সুন্দর পরামর্শ আমাদের চলার পথে প্রেরণা জুগাবে।
সকলের প্রতি রইল আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা।
সকলে ভাল থাকুন, বিএমসিসি’র সাথেই থাকুন।
রাসেল রহমান শিমুল
হাসান খুরশিদ রুমি
আজ বিএমসিসি পরিবারে যুক্ত হলেন প্রিয় রুমি ভাই।
হাসান খুরশিদ রুমি একজন বিশিষ্ট ডাকটিকিট সংগ্রাহক, লেখক ও অনুবাদক। ফিলাটেলিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ (PSB) এর জেনারেল সেক্রেটারি রুমি ভাই। PSB এর পক্ষে রুমি ভাই ও আকবর ভাই সবসময় BMCC' র পাশে থেকেছেন ও নানা ভাবে সহযোগিতা করেছেন। BMCC ও একি মনোভাব নিয়ে PSB'র পাশে থাকবে।
আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতায় আমরা অনেক দুর অগ্রসর হবো এই প্রত্যাশা রাখি।
আসুন আমরা সবাই এই প্রিয় মানুষটিকে স্বাগত জানাই।
সাকিল হক
শিল্পী মুর্তজা বশীর এর ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন
17 AUGUST 2019
No comments:
Post a Comment