Blog




স্মরণ কালের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ১১টি জেলা নিমজ্জিত ছিল। এদেশের মানুষের অকৃপণ সহযোগিতায় প্রিয় মাতৃভূমি আবারও স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। এবার বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি স্বাভাবিক তথা স্বাভাবিক জীবন চলমান করার জন্য কাজ করতে হবে। ইতিমধ্যেই অনেক ব্যাক্তি, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়ে আছেন পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য। বন্যা পরিস্থিতির কারণে যারা বাসস্থান ও কাজ হারিয়েছেন তাদের পুনর্বাসনের জন্য। আমরা এ সকল ব্যাক্তি, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি। এ যেন সত্যিই এক মাথা নত না করা বাংলাদেশ!

আমাদের সংগঠন বাংলাদেশ ম্যাচবক্স কালেক্টর্স ক্লাব, বিএমসিসি একটি ছোট্ট সংগঠন। ক্লাবের নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি আমরা দেশের বিভিন্ন সামাজিক দায়বদ্ধতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে যতটা সম্ভব ভূমিকা রাখার চেষ্টা করি। বিগত নয় বছর ধরে আমরা সম্পৃক্ত। এবারও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করেছি এই দুর্যোগে মানুষের পাশে থাকতে। বিগত দু সপ্তাহ আমরা ফান্ড সংগ্রহ করেছি বিভিন্ন মাধ্যমে এবং আমরা নিজেরাও অংশ নিয়েছি। বিভিন্ন জেলার বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনা করে লক্ষীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার কিছু গ্রামকে আমরা সহযোগিতার জন্য নির্বাচন করি। ৪ সেপ্টেম্বর আমরা বাজার সম্পন্ন করি। ৫ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা থেকে আমরা ১৪ জন প্যাকেটিং শুরু করি। প্রতিটি আইটেম বস্তা থেকে খুলে বের করে মেপে প্যাকেট করা। যা চলে টানা ৬টা পর্যন্ত। মাঝে ২০ মিনিট লাঞ্চের বিরতি। আমরা ৪ জন বাদে পুরো টিমে বাকিরা সব তরুণ। ২০ থেকে ২৫ এর মধ্যে বয়স। তন্মধ্যে আশরাফুল, তমাল, মাহফুজ, তাসিন অন্যতম। এই তরুণ গুলো যে কি অমানবিক পরিশ্রম করেছে তার সাক্ষী আমি নিজেই (আমার উপলব্ধি করতে অসুবিধা হয়নি কিভাবে তরুণরা ত্রিশ দিনেই একটি দেশ পাল্টে দিয়েছিল)। বিকাল ৬টায় আমাদের একটি বিরতি ছিল। রাত দশটায় আমাদের ট্রাক আসে। ৪৬৫ প্যাকেট আমাদের লোড করতে হয়েছে। যার প্রতিটি প্যাকেটের ওজন ১০ কেজির ওপর। এ পর্বে অংশ নেই আমরা সিনিয়ররা। আমাদের গন্তব্যের জন্য সময় ঠিক করা হয়েছিল ভোর চারটা। চারটায় পারিনি আমরা যাত্রা শুরু করি ঠিক ৫টায়। ১০জনের টিম। ট্রাকের পিছনে কোনভাবে গাদাগাদি করে বসা। মাঝ পথে বৃষ্টি। ভালো খারাপ রাস্তা মিলিয়ে আট ঘন্টা ত্রিশ মিনিটের যাত্রা শেষে আমরা গন্তব্যে পৌঁছাতে পারি। এরপর ট্রাক থেকে আবার প্যাকেট আনলোড করে ভ্যানগাড়িতে তুলে কয়েক মাইল পথ কখনো হেটে বা কখনো পানি ভেদ করে তা মানুষের হাতে পৌঁছে দেয়া। এরপর আবারও দীর্ঘ নয় ঘন্টা ট্রাকের পিছনে বসে রাত ১টায় বাড়ি ফেরা।
কেন এত বিষদে লিখলাম এবার এ কথা বলতে চাই। পুরো বন্যা পরিস্থিতিতে শুধু আমরা নই, যারা যারাই অংশ নিয়েছেন (ছোট বড়) তাদের সবাইকে একই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। কষ্ট কিছুটা কম বা বেশি। কিন্তু বরাবরের মতো সোস্যাল মিডিয়াবাসিদের চেতনার কাছে সমস্ত কিছু ম্লান হয়ে যায়। কদিন আগে কিছু তরুণ তরুণী ত্রান-সাহায্য নিয়ে গিয়েছিল। তারা ফটোসেশন করেছে, পিকিনিকে গিয়েছে, ফাজলামো করেছে এমন অনেক কথাই বলা হয়েছে সোস্যাল মিডিয়াতে। দুটো হাত নেই এমন একটি ছেলেও তার টিমের মাধ্যমে হাজার খানেক পরিবারকে ত্রান-সাহায্য দিয়ে এসেছে। তাকে যে পরিমাণে গাল মন্দ করা হয়েছে তা অবিশ্বাস্য। অনেকেই নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম পড়ে গিয়েছে সেসব নিয়েও কথা উঠেছে।
যারা এ জাতীয় কথা বলেন এবং প্রচার করেন তাদের অনুরোধ করবো "ফটোসেশান" শব্দের অর্থ কি আগে শিখে আসুন। সম্মান করুন সেই তরুণদের যারা এতটা সাহস নিয়ে কাজ করে এসেছে। যা আপনারা পারেননি। আপনাদের সন্তানরা আপনাদের মতোই হবে যদি আপনারা নিজেদের না বদলান। লুকিয়ে লুকিয়ে এসব মানুষরা পর্ণগ্রাফি দেখবে কিন্তু প্রকাশ্যে ভালো কাজ দেখার সময় এদের ধর্ম আর চেতনা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। তখন তারা একেকজন পীর সাহেব হয়ে ওঠেন। মানবিক কাজ করতে যাচ্ছে কারো শ্রাদ্ধ করতে বা খেতে যাচ্ছেনা যে, কেউ একটা ছবি তুলতে পারবেনা। আপনারা ভিউয়ের কথাও বলেন। ভিউ তো আপনারাই দিচ্ছেন। না দেখলেই তো হয়! আসলে ভিউ তো আপনারা চান। এদের কনটেন্ট চুরি করে রঙ মাখিয়ে আপনারাই পোস্ট দিয়ে চাতকের মত বসে থাকেন ভিউয়ের জন্য। যাকে সাহায্য করা হচ্ছে তার ছবি তোলা প্রসঙ্গে বলি। অনেক ছবি তুললেও এমন ভাবে তুলছেন যাতে কারো চেহারা না আসে। কারো ছবিতে চেহারা আসলেও তা ব্লার করে দেয়া হচ্ছে। ইচ্ছা থাকা না স্বত্তেও অনেকের ছবি উঠে যাচ্ছে। করার কিছু থাকেনা কারণ দুর্যোগে এমন ছবি উঠতেই পারে। জাতীয় সংবাদপত্র গুলো দেখেন। কোন বানভাসি মানুষের ছবি কি ব্লার করা আছে? সেটা সিংগেল ছবি হোক বা সাহায্যরত অবস্থার ছবি হোক। বলছেন দান হবে গোপনে -হ্যাঁ ঠিক তাই। আপনারা যখন ব্যাক্তিগত কোন দান করবেন তখন গোপনেই করবেন প্লিজ। এই টইটম্বুর পানিতে গোপন দান করা যাবেনা। প্লিজ আন্ডারস্ট্যান্ড। আফগানিস্তান, ইরাক, গাজাসহ যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গুলোতে যে সাহায্য যাচ্ছে বা মানুষ করছে তা কি সব গোপনে হচ্ছে! পুরো বিশ্ব জানে। প্লিজ এমন হিপোক্রেটিস হবেন না। মুতে পানি না নিলেও চেতনায় আপনারা শ্রেষ্ঠ! দেখুন, যখনই আপনি পাব্লিক ফান্ড নিয়ে কাজ করবেন তখনই আপনার মাঝে একটি দায়বদ্ধতা থাকবে। যার জন্য ডকুমেন্টস অবশ্যই রাখতে হবে। ইউনিফর্ম পড়ে গেলেও দোষ! তবে কি ন্যাংটা হয়ে যাবে? সুশীল ভাই বোনেরা এক্ষেত্রে ইউনিফর্ম হচ্ছে একটি পরিচয়। আমরাও পড়েছিলাম। আমাদের ছবি গুলোতে দেখে নেবেন। আমি বিশ্বাস করি, যেকোনো দুর্যোগে আমরা সহ যারাই অংশগ্রহণ করেন তারা সোয়াব বা নেকির আশায় করেন না। সমস্যার সমাধানটাই তাদের কাছে মুখ্য থাকে। সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানবেন এসব। আমার কথায় কেউ কষ্ট নেবেন না প্লিজ। নিজেকে প্রশ্ন করুন আমরা এমন করি কিনা। আমি বলছিনা আপনাদের মন গুলোকে বড় করুন। সেটা হবে অরণ্যে রোদন। অন্তত মুখটা আর মানসিকতাটা সামাল দিন। না হলো আপনাদের ছেলে মেয়েরাও একি কাজ করবে। এদেশ আর সহস্র বছরেও শুধরাবে না। আমি আপাতত এখানেই শেষ করছি।
আমাদের এবারের ত্রান কার্যক্রম যৌথভাবে পরিচালনা করেছে বিএমসিসি এবং মিলেনিয়াম ফাউন্ডেশন। আমাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে গুডম্যান ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ও এভারেস্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই জেমস আঞ্জুস ও তার প্রতিষ্ঠান দি খ্রিস্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিঃ কে, যারা আমাদের জায়গা দিয়ে সাহায্য করেছেন। তাদের সাহায্য ছাড়া আমাদের এত প্যাকেটিং সম্ভব হতোনা। আমি ধন্যবাদ জানাই শফিকুল ইসলাম, দীপক সাহা, অঞ্জন বণিক, রনি রায়, বিরাজ সাহা ও টনি সাহাকে যারা অনেক ব্যাস্ততার মাঝেও এসে আমাদের টিমকে সাহায্য করেছেন উৎসাহ দিয়েছেন। নাস্তা দিয়েছেন আমাদের। আমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই জনাব মিজান স্যারকে (সহঃ প্রধান শিক্ষক) মোল্যার হাট হাই স্কুল, রায়পুর উপজেলা। যার নেতৃত্বে রায়পুরের তরুণ ভাইয়েয়া আমাদের সাথে কাজ করেছেন। এই তরুণ ভাইয়েরা আমাদের পাশে না থাকলে এত কাজ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হতোনা। ফেসবুকে আমার বন্ধু তালিকার ১১জন বন্ধু আমাদের অর্থনৈতিক ভাবে সাহায্য করেছেন। তাদের সাহায্য অবশ্যই আমাদের অনেকটা এগিয়ে নিয়ে গেছে। বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই জনাব আক্কাচ উদ্দিন মোল্লা ও জনাব মোহাম্মদ মজনু মোল্লাহ ভাইকে যাদের আমরা মেন্টর ভাবি। যথারীতি তারা আমাদের পাশে ছিলেন। আমাদের আর একজন নেপথ্য চরিত্র রাসেল রহমান শিমুল, মহাসচিব, বিএমসিসি। শিমুলের আম্মুর অপারেশন হয়েছে। এই অবস্থাতেও এই ত্রানের আয়োজন এবং ফান্ড জোগাড় করেছেন পাশাপাশি। আমরা ট্রাকে ওঠার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত আমাদের সাথে ছিলেন। প্রতিটি মুহুর্তেই আমাদের খোঁজ নিয়েছেন মুঠোফোনে। শিমুলের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা।
আমরা মানবতার ফেরিওয়ালা নই। আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াই।
ধন্যবাদ।
সাকিল হক প্রেসিডেন্ট, বিএমসিসি



দিয়াশলাই ২য় সংখ্যার প্রকাশনা উৎসব......
স্থানঃ হাসনাবাদ পাকা বাড়ী, বান্দুরা, নবাবগঞ্জ, ঢাকা।

বাংলাদেশ ম্যাচবক্স কালেক্টরস ক্লাব (বিএমসিসি) দেশের প্রথম এবং একমাত্র দেশলাই সংগ্রাহকদের সংগঠন এবং একটি ব্যতিক্রমধর্মী সংগঠন হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত। কেবলমাত্র সংগ্রহের গন্ডিতে আবদ্ধ না থেকে জগতের বিশালতা এবং মানব কল্যাণে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে সদস্যরা বিশেষভাবে তৎপর। তাই সমাজ তথা দেশ ও দশের উপকার এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশবিশেষ হিসেবে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক সামাজিক কাজকর্মে সদস্যরা সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণ করেন। তাই বর্তমানের ক্রান্তিকালীন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ম্যাচবক্স কালেক্টরস ক্লাব (বিএমসিসি) এবং ফিলাটেলিক সোসাইটি অফ বাংলাদেশ (পিএসবি) এর যৌথ উদ্যোগে ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে মানুষজনের হাতে বিনামূল্যে মাস্ক তুলে দেয়া হচ্ছে ; যা করোনাকালীন জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে বিশেষভাবে সহায়ক হবে।
তারই অংশবিশেষ হিসেবে গত ৩০ অক্টোবর সদস্যরা গিয়েছিলেন ঢাকার পার্শ্ববর্তী স্থান বান্দুরায়। ছায়া- সুনিবিড় ইছামতি তীরের ঐতিহ্যবাহী বান্দুরার সৌন্দর্য যেমন ছিল মনমুগ্ধকর, তেমনি বান্দুরার বন্ধু এবং অধিবাসীদের অভ্যর্থনা-আপ্যায়ন ছিল তুলনাঅতীত। বান্দুরা বাজার এবং তার আশেপাশে মাস্ক বিতরণ শেষে বিকেলে ছিল উপমহাদেশের প্রথম দেশলাই বিষয়ক আন্তর্জাতিক জার্নাল "দিয়াশলাই" এর দ্বিতীয় সংখ্যার মোড়ক উম্মোচন অনুষ্ঠান। আর অনুষ্ঠানটিকে বিশেষভাবে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ব্যতিক্রমধর্মী বিএমসিসি স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছিল স্থানীয়ভাবে "ভুতুড়ে বাড়ি" বলে পরিচিত বান্দুরার এক পুরনো জমিদার বাড়িকে।
জমিদার বাড়িটি অনেক পুরনো। রায় সাহেব বলে পরিচিত স্থানীয় এক প্রভাবশালী জমিদার বাড়িটি সপ্তদশ-অষ্টাদশ শতাব্দীতে তৈরি করেছিলেন বলে শোনা যায়; যদিও জমিদার বাড়ি এবং জমিদার বংশ সম্পর্কে আর বিশেষভাবে জানা যায় না। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর কয়েকবছর জমিদার বাড়িটিতে রূপালী ব্যাংক তাদের হাসনাবাদ শাখার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে সেখান থেকে ব্যাংক স্থানান্তরিত করা হয়। এরপর বাড়িটি নির্জন, জনহীন হয়ে পড়ে আছে ইতিহাসের অংশ হিসেবে। অযত্নে-অবহেলায়।
সেই নিস্তব্ধ এক ভুতুড়ে বাড়ির প্রাঙ্গণে সদস্যরা পৌঁছলেন। বাঁশের খুঁটি গেড়ে টানিয়ে দেয়া হলো অনুষ্ঠানের ব্যানার। ঐতিহাসিক জমিদার বাড়িটি দেখে সদস্যরা সকলেই শিহরিত। সকলেই ছবি তুলছেন, নিজেদের মতো কথা বলছেন, কেউ কেউ বাড়ির ভিতরে হেঁটে হেঁটে কড়ি-বর্গাহীন দরজা-জানলা কিংবা বট-অশত্থের চারা গজিয়ে ওঠা দেয়ালে স্পর্শ করে অতীতের সামন্ততান্ত্রিক আভিজাত্যকে অনুভব করতে চাইছেন। এরপর অনুষ্ঠান পর্ব শুরু হলো। মোড়ক উন্মোচন করা হল "দিয়াশলাই" এর দ্বিতীয় সংখ্যার। অনুষ্ঠান পরিচালনা করছিলেন বিএমসিসি র মহাসচিব জনাব রাসেল রহমান শিমুল। উপস্থিত ছিলেন বান্দুরার মিলিনিয়াম ফ্রেন্ডস গ্রুপের সদস্যবৃন্দ; যাঁরা বান্দুরার সমস্ত কার্যক্রম পরিচালনায় অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। বক্তব্য রাখলেন বিএমসিসি র প্রেসিডেন্ট জনাব সাকিল হক। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করলেন বান্দুরার বন্ধুদের প্রতি এবং "দিয়াশলাই" এর দ্বিতীয় সংখ্যা উদ্বোধন করা হলো বান্দুরা এবং বান্দুরা অধিবাসীদের উদ্দেশ্যে। মিলেনিয়াম ফ্রেন্ডস গ্রুপ থেকে উপহার স্মারক তুলে দেয়া হলো বিএমসিসি র প্রেসিডেন্ট জনাব সাকিল হক এবং পিএসবি র সাধারণ সম্পাদক জনাব হাসান খুরশীদ রুমি র হাতে। সেদিনের মত অনুষ্ঠান এবং যাবতীয় কার্যক্রম এর ইতি টানা হল। বান্দুরায় চমৎকার একটি দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে এবার ঘরে ফেরার পথ ধরলেন সকলে।

Robert Burns, 30 October 2020




বাংলাদেশ ম্যাচবক্স কালেক্টরস ক্লাব এক ভালোবাসার নাম, এক অনুভূতির নাম, এক প্রশান্তির নাম। শখের জগতে নিজেদের এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে আমাদের নিরন্তর এই পথচলা। আর সাথে পেয়েছি কিছু সমাজ সচেতন, উদ্যমী, শিল্পমনা ও প্রগতিশীল মানুষ। যারা সুন্দর চিন্তা করে, সমাজের প্রাসঙ্গিক পরিবর্তন চায়, দেশকে এগিয়ে নেয়ার স্বপ্ন দেখে। তাঁদের নিয়েই বিএমসিসি। আমরা সবসময়ই চেয়েছি ভালোর সাথে থাকতে, ভাল কিছু করতে। আমরা কখনোই গতানুগতিক, গদবাঁধা কোন সংগঠন করতে চাইনি। গতানুগতিকতার উর্দ্ধে উঠে উন্নত ভাবধারায়, যুগোপযোগী চিন্তা-চেতনার সন্নিবেশ ঘটাতে চেয়েছি। আধুনিক মেধা ও মননে সাজাতে চেয়েছি নিজেদের। আর তার বাস্তবতা হচ্ছে- বিএমসিসি।

শখের দুনিয়াটা আসলে বিশাল। শখের মাধ্যমে ভ্রাতৃত্ববোধ সুদৃঢ় করা যায়, সমাজে অবদান রাখা যায়, মানুষকে ইতিহাস সচেতন করে তোলা যায়, দেশের শিল্প-সংস্কৃতিকে লালন করা যায়, দেশের ঐতিহ্য বহির্বিশ্বে উপস্থাপন করা যায়। এছাড়াও আরো অনেক কিছু করা যেতে পারে। যার অনেকটাই ইতিমধ্যে অত্যন্ত সুচারু রুপে সম্পাদন করেছে বাংলাদেশ ম্যাচবক্স কালেক্টরস ক্লাব। আমরা একসাথে অনেক দূর যেতে চাই, অনেক ভাল কাজ করতে চাই। শুধু প্রয়োজন আপনাদের ভালোবাসা, সমর্থন ও সহযোগিতা। যা আমরা সবসময়ই আপনাদের কাছ থেকে পেয়ে এসেছি আর ভবিষ্যতেও সে ধারা অব্যাহত থাকবে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

“দিয়াশলাই” আমাদের ক্লাবের প্রথম প্রকাশনা। আপনাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও সহযোগিতায় আমরা সত্যিই অভিভূত। বর্তমান এই কঠিন বাস্তবতায় আপনারা যেভাবে আমাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন তা সত্যিই প্রশংসার দাবী রাখে। পাশাপাশি আমাদের বেঁধেছেন কৃতজ্ঞতার বাঁধনে। আর আমরা আমৃত্যু এ বাঁধনেই বাঁধা থাকতে চাই। যে কোন প্রকাশনাই যদি পাঠক প্রিয়তা না পায় তবে তা প্রকাশ অর্থহীন। আমরা এই প্রকাশনা নিয়মিত আপনাদের হাতে তুলে দিতে চাই নতুন ভাবনায়, নতুন আঙ্গিকে।

দিয়াশলাই আপনাদের পত্রিকা। আপনারাই এই পত্রিকার মালিক। আমরা শুধু এর বাস্তবায়ন, প্রকাশনা ও সংরক্ষণের কাজটা করছি। দিয়াশলাইয়ের সমস্ত সফলতা আপনাদের আর ব্যর্থতার দায়টুকু আমরা নিলাম। আপনাদের যেকোন সুন্দর পরামর্শ আমাদের চলার পথে প্রেরণা জুগাবে।

সকলের প্রতি রইল আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা।

সকলে ভাল থাকুন, বিএমসিসি’র সাথেই থাকুন।

রাসেল রহমান শিমুল


হাসান খুরশিদ রুমি 











আজ বিএমসিসি পরিবারে যুক্ত হলেন প্রিয় রুমি ভাই।
হাসান খুরশিদ রুমি একজন বিশিষ্ট ডাকটিকিট সংগ্রাহক, লেখক ও অনুবাদক। ফিলাটেলিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ (PSB) এর জেনারেল সেক্রেটারি রুমি ভাই। PSB এর পক্ষে রুমি ভাই ও আকবর ভাই সবসময় BMCC' র পাশে থেকেছেন ও নানা ভাবে সহযোগিতা করেছেন। BMCC ও একি মনোভাব নিয়ে PSB'র পাশে থাকবে।

আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতায় আমরা অনেক দুর অগ্রসর হবো এই প্রত্যাশা রাখি।

আসুন আমরা সবাই এই প্রিয় মানুষটিকে স্বাগত জানাই।

সাকিল হক


শিল্পী মুর্তজা বশীর এর ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন


17 AUGUST 2019

১৭ আগস্ট,বরেন্য চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশীর এর ৮৭তম জন্মদিনশিল্পীর জন্মদিন উপলক্ষে বাংলাদেশ ম্যাচবক্স কালেক্টরস ক্লাব  BMCC'  পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন  অনুসঠানের আয়োজন করা হয়।শারীরিক অসুস্থতার কারণে শিল্পী বেশির ভাগ সময় বাসাতেই অবস্থান করেন।একারনে অনুসঠানটি তার বাস ভবনেই আয়োজন করা হয়

শিল্পীর জন্মদিন উপলক্ষে তার শিল্পকর্ম দিয়ে দেশলাই ডিজাইন করেন - বাংলাদেশের অন্যতম  দেশলাই সংগ্রাহক  ডিজাইনার  সাকিল হক। চারটির এই দেশলাই সেট এর মোড়ক উম্মোচন করেন শিল্পী নিজেই।মুর্তজা বশীরের বিভিন্ন সময়ে আকা চিত্রকর্ম থেকে এই বিখ্যাত চারটি ছবি নির্বাচন করা হয় দেয়াশলাই ডিজাইনের জন্যশিল্পকর্মের নাম গুলো যথাক্রমে মাই লেডিডটার্সটয়লেট  মাই কান্ট্রি।কোন প্রথিতযশা শিল্পীর শিল্পকর্ম দিয়ে সম্ভবত বাংলাদেশের এই প্রথম কোন স্মারক দেয়াশলাই সেট প্রকাশ করা হলো। 
অনুসঠানের কেক কাটা পর্বে শিল্পী মুর্তজা বশীর নিজ হাতে দেশলাই জ্বালিয়ে মোমবাতি জ্বালান। 
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিখ্যাত চিত্রশিল্পীদের চিত্রকর্ম দিয়ে অনেক দেয়াশলাই প্রকাশ করা হয়েছে।কিন্তু বাংলাদেশে এই প্রথম,  একারণে শিল্পী মুর্তাজা বশীর অত্যন্ত আনন্দের সাথে সাকিল হকের প্রতি ধন্যবাদ জানান। 
উল্লেখ্য যেমুর্তজা বশীর নিজেও একজন উচুমানের দেশলাই সংগ্রাহক।তার সংগ্রহে রয়েছে পাকিস্তান আমল থেকে স্বাধিন বাংলাদেশের অনেক দুর্লভ দেয়াশলাইরয়েছে অনেক প্রাচীন  দুর্লভ ইউরোপিয়ান দেয়াশলাইও। যার বেশির ভাগই মুর্তজা বশীরের নিজ হাতে সংগ্রহ করা।কথা প্রসংগে জানালেন তার বড় মেয়ের একটি থিসিসের কাজে দেয়াশলাই  সংগ্রহ শুরু করেছিলেন তিনি।যা পরবর্তিতে আরো প্রসারিত হয়েছিল। 
অনুসঠানে উপস্থিত ছিলেনবিএমসিসি প্রেসিডেন্ট সাকিল হকসিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইকবাল মজিদ এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদ আকবর হোসেন








No comments:

Post a Comment